প্রয়াত বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি (Osman Hadi)। এক সপ্তাহের জীবন-মরণের লড়াইয়ের পর গতকাল, ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ওসমান হাদির মৃত্যু হয়। আর হাদির মৃত্যুর পরই আবারও জ্বলে উঠল বাংলাদেশ (Bangladesh)। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন। হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা করেছেন। ওসমান হাদির পরিবার ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান ইউনূস। ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র তথা বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে কার্যত রণক্ষেত্র বাংলাদেশ। সেদেশের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের অফিসেও ভাঙচুর চালিয়ে রীতিমত আগুন ধরিয়ে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। ঢাকা সহ একাধিক জায়গায় তাণ্ডব দেখিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সূত্রের খবর, এই আবহে বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ রাষ্ট্রপুঞ্জের! একটি বিবৃতি জারি করে রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, 'হাদির মৃত্যুতে যে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে, তার নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন।' এমনকি আপাতত বাংলাদেশকে সংযত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা সহ বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় উত্তেজিত জনতার ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এক সাংবাদিক ও এক হিন্দু যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বাড়িতে যেমন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ঠিক তেমনই বিক্ষোভকারীদের হিংসার আগ্রাসনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ছায়ানট ভবনও। বৃহস্পতিবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র তথা বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের উত্তপ্ত হল বাংলাদেশ। তারই মধ্যে এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবারই সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ পৌঁছেছে। বিমানেই তাঁর মরদেহ পৌঁছেছে বলেই জানা গিয়েছে।
পাশাপাশি, হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের বেশ কিছু অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এক সাংবাদিককেও খুনের অভিযোগও উঠেছে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। এমনকি এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িতে বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনা কি নতুন? না একেবারেই নয়। এর আগেও অন্তর্বর্তী সরকারের রাজত্বে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে। যে দেশের জনগণ জাতির পিতার অবদান ভুলে যায়, সেদেশে এমন ঘটনা যে ঘটবে, সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। শুধু তাই নয়। ওই দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ভবনেও রীতিমত ভাঙচুর চালিয়ে লুঠপাট চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। চেয়ার, টেবিল, ছবি, ভিডিও এমনকি হারমোনিয়াম, যা পেয়েছে হাতের কাছে, কোনওকিছুই বিক্ষোভকারীদের আগ্রাসন থেকে বাদ যায়নি।