বিলে স্বাক্ষর এবং রাষ্ট্রপতির বাধ্যবাধকতা: দ্রৌপদীকে ব্যাখ্যা দিতে সাংবিধানিক বেঞ্চ গড়ল সুপ্রিম কোর্ট, শুনানি মঙ্গলবার
পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চান্দুরকর। আগামী ২২ জুলাই, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই মামলা শুনবেন তাঁরা।
সংবিধানের ১৪৩ ধারার অধীনে রাজ্যপালের বিলে সই করা নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পরামর্শ চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। মঙ্গলবার সেই মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির পরামর্শ মেনে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চও গঠন করেছে শীর্ষ আদালত।
পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চান্দুরকর। আগামী ২২ জুলাই, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই মামলা শুনবেন তাঁরা।
সাধারণত, কোনও রাজ্যের আইনসভায় বিল পাশ হলে তা সম্মতির জন্য রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। রাজ্যপাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেন। ভারতীয় সংবিধানের ২০১ ধারা অনুযায়ী, কোনও বিল রাষ্ট্রপতির কাছে গেলে তাঁর কাছে দু’টি বিকল্প রয়েছে— হয় ওই বিলে সম্মতি জানানো, অথবা তা নাকচ করে দেওয়া। কিন্তু এই কাজের জন্য সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে কোনও সময়সীমা দেওয়া হয়নি। তা নিয়েই বার বার দ্বন্দ্ব চলে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে। সেই আবহে তামিলনাড়ু সরকারের এক মামলায় রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ নিয়ে আপত্তি তোলেন উপরাষ্ট্রপতি-সহ অনেকেই। রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আদালতের আছে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতের পরামর্শ চান রাষ্ট্রপতি মুর্মুও। মূলত ১৪ দফা প্রশ্নের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের সাংবিধানিক ক্ষমতা ও নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ নিয়েও।
গত এপ্রিল মাসে তামিলনাড়ু সরকারের একটি মামলায় বিল নিয়ে মতামত জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তামিলনাড়ুর আইনসভায় পাশ হওয়ার পর ১০টি বিল সে রাজ্যের রাজ্যপাল আরএন রবি আটকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ওই বিলগুলি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যপালের আচরণকে ‘বেআইনি’ বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ। দুই বিচারপতি জানান, রাষ্ট্রপতি অনির্দিষ্ট কালের জন্য কোনও বিল ফেলে রাখতে পারবেন না। যে কোনও বিল হাতে পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি বেশি সময় লাগে, সে ক্ষেত্রে তার কারণও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। কোনও যুক্তি বা ব্যাখ্যা ছাড়া অযথা বিলম্ব ‘সাংবিধানিক নীতি লঙ্ঘনের নামান্তর’ এবং ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর জন্য ক্ষতিকর’ বলেও উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত।